শিক্ষা কোন পণ্য নয় এটি একটি মুল্যবান সম্পদ , সন্তান সন্ততি কোন পণ্য নয় মানব জীবনে অমুল্য সম্পদ। এসবের পেছনে যে খরচাদি হয় তাতে কোন দরকষাকষি চলে না কারণ এসবের পিছনে যে অর্থ ব্যয় তা পারিভাষিক শাব্দিক অর্থে একে বিনিয়োগ বলে। আজকাল এইসবের সঠিক সংজ্ঞার পেছনে নানা জন না বোঝে জাতির কাছে খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়ে জাতিকে কিংকর্তব্যবিমুঢ় অবস্থানে নিয়ে যায় যা আদৌ কারো কাম্য নয় হতে পারে না। শিক্ষার ক্ষেত্রে যে ব্যয় রাস্ট্র যন্ত্র করে তা নি:সন্দেহে বিনিয়োগ যা জাতির জন্য বয়ে আনে আত্ন সন্মান উন্নয়ন সহ নানা পজিটিভ দিক।
এসব গুনের কথা বলে শেষ করা যাবে না। দেশের সিংহভাগ বেসরকারি ভাবে পরিচালিত হয়। জাস্ট নাম মাত্র দুই থেকে তিন শতাংশ রয়েছে সরকারি। যাকে বেসরকারি হিসাবে নাই বললে অতুক্তি হবে না। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। যে শ্লোগান প্রাচীন কাল থেকে বয়ে আসছে, শুনে আসছে এবং বাকি দিন গুলোতে চলবে। সর্বজন স্বীকৃত। কিন্তু গাড়ি যতই দামি হোকনা কেন সেখানে প্রশিক্ষিত চালকের বিকল্প নেই এবং এর সাথে যারা জড়িত তারা সবাই অর্থনৈতিক ভাবে দুস্তর স্বাবলম্বী। নইলে ওই পেশার কর্মক্ষেত্রে নানা ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারে। শিক্ষা আজ বিশ্বের দরবারে সবচে উচ্চ গবেষণাঘারে পৌছেছে। এর পিছনে রাস্ট্র যন্ত্র সবচে বেশি বাজেট বরাদ্দ করে এবং কাং্খ লক্ষ্য পৌছতে কোন বাঁধা সম্মুখীন যাতে না হয় সেদিকে গুরুত্বপূর্ণ দেয়। কিন্তু প্রিয় স্বদেশ বাংলাদেশ ও এই প্রতিযোগিতায় কোন অংশে পিছিয়ে নেই ।
জাতি ইতিমধ্যে একবিংশ শতাব্দী পার করছে এবং আধুনিক সভ্যতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ শিক্ষা চিকিৎসা সংস্কৃতি সহ নানা দিক অগ্রসর মান যেভাবে হচ্ছে তাই অনুসরণ করে চলছে। কিন্তু এর মাঝে রয়েছে নানা ঘাত-প্রতিঘাত। যেগুলোকে রাস্ট্র যন্ত্র আপন মনে ওভারকাম করতে বদ্ধপরিকর। আকাশ সংস্কৃতির যুগে অর্থ নয় মানুষ উন্নয়নের দিক দিয়ে অনগ্রসর থাকতে চায়না। বাংলাদেশ একটি ছোট ভূখন্ডের দেশ। প্রতি বছর ব্রেইন ড্রেইন অর্থাৎ মেধা পাচার হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষার জন্য যারা বাহিরে দেশে যাচ্ছে তারা আর সহসাই ফিরছে না অর্থাৎ শিক্ষা ও শিক্ষকতার মতো মহান পেশার কদর নিয়ে চলে টানাহেঁচড়া যা জাতির সদস্য হিসাবে ভাবতে ভীষণ অবাক লাগে।
আজকে বেসরকারি শিক্ষক সম্প্রদায়ের সরকারের প্রতিশ্রুতির অপেক্ষায় রাজপথ রাত্রি যাপন করছে, ঘুম খাওয়াদাওয়া বিলাসী জীবন বাদ দিয়ে রাজধানীর ইট পাথরকে সঙ্গী করে প্রতিটি মুহূর্ত অতিক্রম করছে অত্যন্ত ধৈর্য্যর সঙ্গে। কিন্তু কেন ? নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে প্রতিনিয়ত ! এই সমাজে সবচে নিকৃষ্ট ব্যক্তিটিও একজন জাতি গড়ার কারিগরের সঙ্গে অশোভন আচরণ করতে রীতিমতো ভয় পায় কিন্তু যখন রাস্ট্র যন্ত্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যখন প্রতিশ্রুতি আসে তখন যদি এর বাস্তবায়নে গড়িমসি কিংবা না হয় তাহলে এর চেয়ে জাতির সেবক গণ কীভাবে লজ্জিত হয় ? আজকে ভাবতে অবাক লাগে কেন আজ শিক্ষা গুরুরা রাজপথে ? উত্তর সহজ তাদের নুন্যতম চাহিদা মেটানোর আশা । এই চাহিদা মেটাতে রাস্ট্র যন্ত্র বদ্ধপরিকর। কেননা যদি লক্ষ্য করি, খুলাফায়ে রাশেদিনের শাসনামল কিংবা ন্যায়পরায়ণ বাদশা তাদের কথার প্রতিশ্রুতি কতইনা যথাযথ ছিল ! মান্যবর প্রধান উপদেষ্টা আপনি শুধু বাংলাদেশ নয় আপনি এইসময় একজন বিশ্ব নন্দিত নেতা।
আপনি এই বিশ্বে মডেল হিসাবে জাতি জানে আপনার কর্ম হবে মডেল যেখানে এর সাথে কারোই জুড়ি চলে না কিন্তু আপনার প্রিয় স্বদেশে শিক্ষক সমাজ পেটের ক্ষুধা মেটাতে রাজপথ খুঁজে নিয়েছে, ইটের উপর রাত্রি যাপন করছে ! কতই না নাগরিক হিসাবে নিজকে এই সন্মানিত শিক্ষক সম্প্রদায়ের কাছে তুচ্ছ ও লজ্জিত মনে হচ্ছে ? পিতামাতার সাথে সন্তানের যেমন তুলনা চলে না ঠিক তেমনি শিক্ষক সম্প্রদায়ের সাথে কারো তুলনা চলে না চলতে পারে না। দাবি সীমিত পরিসরে। রাস্ট্র যন্ত্ররের নিকট তা খুব কষ্টদায়ক নয়।
আজকে সারা দেশ ব্যাপী শিক্ষক সম্প্রদায় নিয়ে একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে যা সভ্য জাতি হিসেবে কারো কাম্য নয়। মান্যবর প্রধান উপদেষ্টা আপনি দ্রুত জাতিকে এই অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে মুক্তি দিয়ে একজন শিক্ষক প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে জনমভর শ্রদ্ধার শ্রেষ্ঠ পাত্র হিসাবে মডেল হয়ে বেঁচে থাকুন এ শুভ কামনায়। রাজপথ রক্তে রঞ্জিত নয়, কারো গলগ্রহ নয় শিক্ষক সম্প্রদায় আপনার মাধ্যমে এই বাংলাদেশে মহান পেশার মহান কারিগর হিসাবে স্বীকৃতি পাক এ হোক আজকের বাংলাদেশ।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক ( ইংরেজি )
তারঘাট আনছারীয়া ফাজিল মাদরাসা।