বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
মোরেলগঞ্জে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান: পানগুছি নদীতে প্রশাসনের যৌথ টহল রাজপথ নয় সন্মান নিয়ে শ্রেণি কক্ষে ফেরার ব্যবস্থা চায় সন্মানিত শিক্ষক সমাজ ! চিলমারীতে মিথ্যা মামলায় আটক জেলের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন বেতাগীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত রংপুরসহ আট বিভাগকে প্রদেশ ঘোষণার দাবি কুড়িগ্রামে ভ্যান ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে মাছ ব্যবসায়ীর মৃত্যু উলিপুরে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক -কর্মচারীদের কর্ম বিরতি, বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত। করিমগঞ্জে নবীন বরন, সংবর্ধনা, বিতর্ক, আলোচনা ও অভিভাবক সভা অনুষ্ঠিত আমতলীতে নবম শ্রেণির ছাত্রের যুদ্ধবিমান আবিষ্কার, অর্থসংকটে থেমে আছে সিফাতের স্বপ্নযাত্রা আমতলীতে জাকের পার্টির সাংগঠনিক জনসভা, র‌্যালি ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত

রাজপথ নয় সন্মান নিয়ে শ্রেণি কক্ষে ফেরার ব্যবস্থা চায় সন্মানিত শিক্ষক সমাজ !

এম আর বাবুল
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৫৭৫৪ বার পঠিত
এম আর বাবুল

শিক্ষক সম্প্রদায়ের ঘাম ঝরা পরিশ্রমের বদৌলতে আদিম যুগ থেকে আধুনিক সভ্যতা রূপান্তরিত হয়েছে। কুসংস্কার অজ্ঞাত মুর্খতা পরিহার করে একটি সভ্য ও আধুনিক রাস্ট্র বিনির্মানে শিক্ষকের ভুমিকা অপরিহার্য। সেই ভাবনা থেকে মুলতঃ শিক্ষকতা পেশাকে মহান পেশায় আখ্যা দিয়েছে বিজ্ঞ সমাজ। একটি দেশের শিক্ষা সংস্কৃতি অবকাঠামো গত উন্নয়ন মেধা মনন সন্মানিত শিক্ষক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে তৈরি হয় এবং রাস্ট্র যন্ত্র এর প্রকৃত স্বকীয়তা ফিরে পায় এবং বিশ্বের দরবারে একটি সভ্য ও আদর্শ জাতি হিসাবে মাথা উঁচু করে দাড়াবার শক্তি খুঁজে পায়। যা পরবর্তী প্রজন্ম যুগ যুগ ধরে তা’ অত্যন্ত সন্মানের সহিত মনেপ্রাণে লালন করে। শিক্ষকতা শুধু একটি পেশা নয় এটি আমত্যু গবেষণাধর্মী হিসাবে একজন শিক্ষকের মনন মেধায় কাজ করে। যাঁদের অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও নিপুণ ভাবতা জাতি পায় অত্যাধুনিক আবিস্কার।

আজকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা চিকিৎসা সহ নানাবিধ উন্নয়নের মুলের দিকে লক্ষ্য করলে এই পেশার সাথে যাঁরা জড়িত তাঁদের গবেষণার ফসল হিসাবে স্বীকৃত মেলে। কিন্তু প্রিয় স্বদেশের চিত্র পুরো উল্টো। যাঁরা জীবনে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে নিজকে মহান পেশায় ব্রতী হয়ে আত্ম নিয়োগ করেন এবং করে আসছেন। তাদের জীবনের ভেতর লুকিয়ে করুণ কাহিনী। বেদনার পাহাড় জমে পরিবার সংসার আর প্রতিযোগিতা মুলক দৈনন্দিন বাজারে সাথে কুলিয়ে না উঠতে পেরে হতাশার সাগরে নিমজ্জিত হচ্ছে। ফলে ঋনের বোঝার দায়ভার মাথা নিয়ে যতসামান্য মাইনে দিয়ে চলছে অসহনীয় জীবন ! প্রিয় স্বদেশ ইতিমধ্যে স্বাধীনতার চুয়ান্ন বছর অতিবাহিত হতে চলেছে। যেখানে কৃষি চিকিৎসা সহ নানা পেশার নিয়োজিত লোকজন ভাগ্যকাশ রাতারাতি পরিবর্তন হলেও মহান পেশায় নিয়োজিত শিক্ষকদের ভাগ্যের চাকা আজও সেকেলে পরিলক্ষিত হচ্ছে। নেই কোন অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নেই সামাজিক মর্যাদা ফলে ভবঘুরে জীবনের মধ্যে দিয়ে এই পেশাতে কাটাতে হচ্ছে। অর্থনৈতিক দৈন্যতা স্বাধীনতার চুয়ান্ন বছরেও না ঘোচাতে না পারায় পরিবার, আর সমাজের কাছে অসহায় হয়ে পড়ছে !

চলতি বছরের শুরু থেকে এই ইনট্রিম গর্ভমেন্টের অধীনে আন্দোলনের মাধ্যমে যতসামান্য সফলতার মুখ সন্মানিত শিক্ষক সমাজ দেখলেও মান্যবর সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টার আশার বানী নিয়ে বুক বেধে আছে সন্মানিত শিক্ষক সমাজ । চলতি বাজেটে শিক্ষকদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য ন্যায্য পাওনা কিছুটা হলেও বুঝিয়ে দিতে সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা জাতিকে আশ্বস্ত করেন এবং বিগত ঈদ উৎসবে পঁচিশ থেকে বাড়িয়ে ঈদ বোনাস করেন পঞ্চাশে। যেখানে কিছুটা হলেও শিক্ষক সম্প্রদায় স্বস্তির ঢেকুর তুলে । যা রাস্ট্র যন্ত্রের জন্য নি:সন্দেহে ইতিবাচক দিক। এবং বাড়ি ভাড়া চিকিৎসা ভাতা পেতে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ দফায় অধিদপ্তর সচিবালয় প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। মান্যবর উপদেষ্টা শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার দিতে অত্যন্ত আন্তরিক যা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ গণমাধ্যমে দেশব্যাপী চাউর হয়েছে। কিন্তু বিধিবাম যখনই বাস্তবায়নের দাবি ওঠে তখন শুরু নানা তেলেসমাতি কর্মকাণ্ড যা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বলে প্রিয় শিক্ষক সম্প্রদায় অতি সহজে বুঝতে পারে । বাজেটের পরপরই শিক্ষক সম্প্রদায় ন্যায্য দাবি পেতে আগষ্টে রাজপথে হাজির হলে আশ্বাসের বাণী শুনিয়ে বিদায় দেন যা ছিল এক প্রকার জাতি গড়ার অমিয় কারিগরদের সাথে হঠকারিতা।

সম্প্রতি ২০% বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা কর্মচারীদের ঈদ বোনাস ৭৫% পেতে জাতীয় প্রেসক্লাবে সমবেত হলে আন্দোলনকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ বাহিনী শান্তি পুর্ণ সমাবেশে অতর্কিত হামলা চালায়। মানুষ গড়ার কারিগরদের দেহ থেকে রক্ত ঝরে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয়। জাতির জন্য তৈরি হয় এক কলংক জনক ইতিহাস ।

দাবি আদায়ের জন্য রাজপথ নয় সন্মানিত শিক্ষক সমাজকে অত্যন্ত শান্তি পুর্ণ পরিবেশে তাদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেওয়াই ছিল এই সরকারের বুদ্ধিমানের কাজ। কেননা ছাত্রজনতার বিপ্লবের মাধ্যমে এই সরকারের সুচনা । যারা রাস্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত নয় বিভিন্ন পেশার বৈষম্য দূরীকরণই ছিল মুল লক্ষ্য কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে তা আজ অনেকাংশে ঝিমিয়ে পড়ছে বলে সুশীল সমাজের অভিমত ।

শহিদ মিনার শাহবাগ শিক্ষক সম্প্রদায়ের রাত্রি যাপনের স্থান নয়, জাতিকে আর কত নিন্মগামী হলে এই কাজ গুলো করতে বাধ্য হয়। এখনো সময় আছে মহান পেশার কারিগরদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে সসন্মানে শ্রেণি কক্ষে ফেরার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা তবেই জাতির মঙ্গল। কেননা বাংলার ইতিহাস বড়ই করুণ । শিক্ষক ছাত্র অভিভাবক সবার সহবস্থানে ফিরে আসুক শিক্ষক সম্প্রদায়ের শান্তির পরম বার্তা ।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক ( ইংরেজি )
তারঘাট আনছারীয়া ফাজিল মাদরাসা।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..