বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ভোরে ঘটে যায় এক চাঞ্চল্যকর ও দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা। মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর বালিশের পাশ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, ৬০ হাজার ৫০০ টাকা এবং একটি এটিএম কার্ডসহ ভ্যানিটি ব্যাগ চুরি হয়ে যায়।
ভুক্তভোগী শ্যামলী খানম (৩৮) এ ঘটনায় মোরেলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি জানান, তাঁর মেয়ে আফিফা আক্তার (১৯) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৩ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন। ৯ নম্বর বেডে অবস্থানকালে আনুমানিক ভোর ৫টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের মোবাইল, টাকা ও অন্যান্য মালামাল চুরি করে অজ্ঞাত এক চোর পালিয়ে যায়।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, আনুমানিক ২২ থেকে ৩০ বছর বয়সী এক যুবক ওয়ার্ডে প্রবেশ করে চুরি সংঘটিত করে। তবে অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের নিরাপত্তা ফুটেজ স্পষ্ট হওয়া সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা ভুক্তভোগীদের দেখাতে অস্বীকৃতি জানায়। বিষয়টি নিয়ে রহস্য দানা বাঁধার পাশাপাশি ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং এ ধরনের ঘটনার পেছনে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ কেউ জড়িত থাকতে পারে—এমন সন্দেহও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বাদী শ্যামলী খানম সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেছেন আফিফা আক্তার, মোঃ মারুফ কাজী ও মোঃ জামাল কাজীর নাম।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মতলুবর রহমান বলেন, “ঘটনার বিষয়ে আমরা শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার পর হাসপাতালের রেসপন্স নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এদিকে এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জনসাধারণের দাবি, অবিলম্বে চোরকে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক এবং একই সঙ্গে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হোক। অনেকেই বলছেন, একটি সরকারি হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় এমন নিরাপত্তা দুর্বলতা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক ও ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত।