মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ভারতে ১২ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত চুয়াডাঙ্গা এশিয়া বিস্কুট ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারী রেজাউল হক বিশ্বাস আর নেই ডাকসু নির্বাচন: যা জানা দরকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই সারা দেশে পূজা উদযাপিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস আজ তাড়াইলে আছিয়া খাতুন মহিলা মাদ্রাসার অভিভাবক সম্মেলন, দোয়া ও পুরষ্কার বিতরণ মানিকগঞ্জে কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার আমতলীতে সাবেক স্বামীকে হত্যা করতে কিশোর গ্যাং ভাড়া! স্ত্রীসহ চারজন গ্রেপ্তার দেবীগঞ্জে খড়ের গাদায় চাপা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু আওয়ামীলীগকে সংগঠিত করতে কাজ করছে দুই ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মানিক ও যুবলীগ নেতা মনির আলাল দুলাল দুই ভাই আবারও বেপরোয়া

কোরবানির ত্যাগে থাকুক পরিচ্ছন্নতার বার্তা

মুজিবনগর (মেহেরপুর) প্রতিনিধ:
  • আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫
  • ৫৭৮১ বার পঠিত

কোরবানির ঈদ শুধু পশু জবাইয়ের উৎসব নয়, এটি আত্মত্যাগ, সহানুভূতি ও সামাজিক দায়িত্ববোধের শিক্ষা দেয়। এই ইবাদতের মূল শর্ত হচ্ছে সঠিক নিয়ত, যা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হওয়া উচিত। পাশাপাশি এই সময়ে মানুষের চলাচল, স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর যেন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, তা নিশ্চিত করাও ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্বের অংশ।

❖ কোরবানির নিয়তের মূল শিক্ষা

ইসলামে কোরবানি এমন একটি ইবাদত যার পেছনে উদ্দেশ্য আত্মত্যাগ ও আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ। কোরবানি দেয়ার সময় মনে রাখতে হবে, এটি যেন লোক দেখানো না হয় বরং একান্তভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হয়। কুরআনে বলা হয়েছে, “আল্লাহর কাছে পশুর মাংস বা রক্ত পৌঁছে না, বরং পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।” (সূরা হজ্জ: ৩৭)

সঠিক নিয়ত ছাড়া কোরবানি শুধু একটি পশু জবাইয়ে সীমাবদ্ধ থেকে যায়, যার মধ্যে ইবাদতের পূর্ণতা থাকে না।

❖ পরিবেশদূষণ থেকে রক্ষা পেতে করণীয়

কোরবানির সময় সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় জবাইয়ের পর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। অনিয়মিত ও অবহেলাজনিত কারণে শহর ও গ্রাম দুই জায়গাতেই দুর্গন্ধ ছড়ানো, মশা-মাছি বৃদ্ধি এবং পানি দূষণের মতো সমস্যা দেখা দেয়। নিচে কিছু সচেতনতামূলক করণীয় তুলে ধরা হলো:

✅ নির্ধারিত স্থানে কোরবানি:
শহরাঞ্চলে সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার নির্ধারিত স্থানে কোরবানি দিতে হবে। এতে এক জায়গায় বর্জ্য জমা হওয়ায় দ্রুত অপসারণ সম্ভব হয়। গ্রামাঞ্চলে বাড়ির পাশে খোলা জায়গা বা মাঠ বেছে নেওয়া যেতে পারে।

✅ পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা:
কোরবানির পরপরই রক্ত ও উচ্ছিষ্ট পরিস্কার করতে পর্যাপ্ত পানি, ব্লিচিং পাউডার ও জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে। গরম পানির ব্যবহার রক্ত ও চর্বি দূরীকরণে সাহায্য করে।

✅ গর্ত খনন করে বর্জ্য পুঁতে রাখা:
যেসব জায়গায় বর্জ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা নেই, সেখানে আগেভাগে একটি গর্ত খনন করে তাতে নাড়িভুঁড়ি ও অন্যান্য উচ্ছিষ্ট ফেলতে হবে। পরে তা মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া উচিত, যাতে দুর্গন্ধ ছড়ায় না এবং পরিবেশদূষণ না ঘটে।

✅ শিশুদের নিরাপত্তা:
কোরবানির সময় ব্যবহৃত ধারালো যন্ত্রপাতি শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমে।

✅ ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি পালন:
কোরবানি ও পরিষ্কারের কাজ শেষে সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা স্যাভলন দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এটি শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নয়, বরং ধর্মীয় পরিচ্ছন্নতার অংশও বটে।

✅ সামাজিক দায়িত্ববোধ:
কোরবানির শিক্ষা হলো অন্যকে কষ্ট না দিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করা। যত্রতত্র বর্জ্য ফেলে অন্যের দুর্ভোগ সৃষ্টি করা এই ইবাদতের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে যায় না। তাই নিজের কোরবানির জায়গা ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখা শুধু ভালো অভ্যাস নয়, বরং ধর্মীয় দায়িত্বও।

❖ শহর ও গ্রাম—উভয়ের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ

শহরে যেহেতু মানুষের বসবাস ঘনবসতিপূর্ণ, তাই পরিবেশদূষণের প্রভাবও দ্রুত ছড়ায়। অপরদিকে, গ্রামে খোলা জায়গা থাকলেও সচেতনতা না থাকলে পশুর রক্ত বা বর্জ্য নালায় গিয়ে জলদূষণ ঘটায়। তাই উভয় ক্ষেত্রেই সমান গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা নিতে হবে

কোরবানির ঈদে শুধু ইবাদত নয়, পরিবেশবান্ধব আচরণও আমাদের নৈতিক ও সামাজিক কর্তব্য। সঠিক নিয়ত, পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতা মিলেই এই পবিত্র ইবাদত পূর্ণতা পায়। তাই এবারের কোরবানিতে সবাই যেন নিজ দায়িত্বে সচেতন থাকেন এবং পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখবো—এটাই প্রত্যাশা।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..