রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ক্লিন ইমেজধারী আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মনোনয়নের আশ্বাস দিলেন জাতীয় পার্টি হতদরিদ্র কর্মহীনরা বাদ, ভেকুতে কাজ, কাবিটা প্রকল্পে অনিয়মের পাহাড় নান্দাইলে ইমাম পরিবর্তন নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫ আমতলীতে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ ভূতাইলের মাঠে দর্শকের উল্লাস, ইছাপুরা পেল নগদ ২ লাখ টাকার পুরস্কার সাংবাদিক নেতা সুশান্ত সাহার বাবা বাবু স্বপন সাহার পরলোক গমন: সাংবাদিক কমিউনিটির শোক প্রকাশ বেতাগীতে গ্রীন পিস ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইউনুছ সিকদারের ইন্তেকাল ভোটের মাধ্যমে মসজিদের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত কলাপাড়ায় চাঞ্চল্যকর ডাকাতি ও গণধর্ষণ মামলার তিন আসামি গ্রেফতার

আলুর দাম কম হাওয়ায় বিপাকে ঠাকুরগাঁওয়ের চাষিরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৬১৮১ বার পঠিত

ঠাকুরগাঁওয়ে চলতি মৌসুমে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭-৮ টাকা দরে। তবুও মাঠে ক্রেতা নেই। তাই উৎপাদিত আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন আলু চাষিরা।
গতবছর অধিক দামে আগাম আলু বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় এবারও লাভের আশায় আগাম আলু চাষে ঝুঁকেছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু আগাম আলুর বাজারে ধস নামায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
গতবছর চাষিরা এই সময় প্রতি কেজি আলু মাঠেই বিক্রি করেছিলেন ২৮-৩২ টাকা দরে আর এবার সেই আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭-৮ টাকা দরে। কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি আলু চাষের জন্য বেশ উপযোগী।
দেশের মুন্সিগঞ্জের পরেই আলু চাষে ঠাকুরগাঁওয়ের অবস্থান। সে হিসেবে দেশে আলু উৎপাদনে ঠাকুরগাঁওয়ের অবস্থান দ্বিতীয়। প্রতি বছরই এ জেলায় আলু চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলাতে সরবরাহ করা হয় এখানকার আলু।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার পাঁচ উপজেলায় এবার ২৭ হাজার ৬৪৭ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমির আলু তোলা হয়েছে। আলু উৎপাদন ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ২৩ মেট্রিক টন।
বর্তমান বাজার দরে আলু বিক্রি করে প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) চাষিরা দাম পাচ্ছেন ৯০-৯৫ হাজার টাকা। আর প্রতি হেক্টর আলুর উৎপাদন খরচ হয় প্রায় দুই লাখ টাকা। গত বছর জেলায় ২৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল।
আর উৎপাদন হয়েছিল ৭ লাখ ৪১ হাজার ২৯৭ মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগ বলছে- গত বছরের কিছু আলু মজুদ থাকায় বাজার দর কম। পুরাতন আলু শেষে হলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
আলুর মাঠে বর্তমান সময়ে গ্র্যানোলা জাতের সাদা ও এস্টারিক্স জাতের লাল আলু পাওয়া যায়। স্থানীয় বাজারে লাল আলুর চাহিদা বেশি থাকায় লাল আলুর দাম কিছুটা বেশি। আর সাদা আলুর বাজার রাজধানী সহ অন্য জেলায় হওয়া কারণে অন্য জেলার চাহিদার উপর নির্ভর করে দাম পায় চাষিরা। বর্তমানে সাদা আলু ৭ টাকা ও লাল আলু ৯-১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সাধারণত মাটিতে এক বার আলু রোপণ করলে এক বার ফলন পাওয়া গেলেও এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। চাষিরা এবার দুই বার আলু রোপণ করে ফলন পাচ্ছেন মাত্র এক বার। আগাম আলু রোপণের কয়েকদিন পরেই বৃষ্টি হয়, তাই রোপণকৃত আলু মাঠেই পঁচে যায়। আবারও লাভের আশায় সেই জমিতে আলু ২য় বার রোপণ করেন চাষিরা।
সে কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে চাষিদের। তাছাড়া বাজার অবস্থা ভালো না থাকায় লোকসানে পড়েছেন চাষিরা। সদর উপজেলার রহিমানপুর ও রাণীশংকৈল উপজেলার বনগাঁও এলাকার আলু চাষি ফরিদুল ও কামাল হোসেন বলেন, ‘গত বছর আলুর দাম বেশি ছিল, ফলে কম ফলনেও ভালো লাভ হয়েছিলো। এবার বেশি ফলনেও লোকশান হচ্ছে। লাভ তো দূরের কথা, আসলও তুলতে পারছি না। কম দামে আলু বিক্রি করে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। তার পরেও নগদ টাকার ক্রেতা নেই।’
সদর উপজেলার পটুয়া এলাকার আরেক আলু চাষি কাদেরুল ইসলাম বলেন, ‘সাড়ে ৪ একর জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। খরচ হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। ৬ টাকা দরে আলু বিক্রি করে দাম পাচ্ছি ২ লাখ টাকা। এই টাকায় লাভ তো নয়, আসল টাকাও আসে না। আলু চাষ করে আরও ধার-দেনায় পড়ে গেলাম।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর এলাকার আলু চাষি জালাউদ্দীন বলেন, ‘প্রথমবার ২ একর জমিতে আলু লাগানোর কয়েকদিন পরে বৃষ্টির কারণে বীজ আলু মাটিতেই পঁচে যায়।
আবারও সেই জমিতে আলু লাগায়। আলুর ফলন ভালো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ৬ টাকা কেজি বলছে, বিক্রি করিনি। কারণ এই দামে বিক্রি করলে অনেক টাকা লোকসান হবে।’

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..