রাজধানী মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি বাঙলা কলেজে দিনব্যাপী ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) কলেজ মাঠে বিজনেস এন্ড ক্যারিয়ার ক্লাবের সহযোগিতায় এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
তারুণ্য উৎসব অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুল হাসান।
তিনি বলেন, “পিঠা উৎসব আমাদের শেকড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। আমাদের লক্ষ্য তরুণ প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করা। তারুণ্যের পিঠা উৎসব এই প্রচেষ্টারই একটি উদাহরণ। এরকম আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ তৈরি করবে।”
প্রফেসর কামরুল হাসান বলেন, বাংলার ইতিহাস ও বাঙালী জাতির ইতিহাস তরুণদের গৌরবের ইতিহাস ১৯৫২ সালে তরুণদের রক্তের বিনিময়ে আমরা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা পেয়েছি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে এই তরুণরাই পরাজিত করেছিল। সর্বশেষ ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে এই তরুণদের অবদানই ছিল মুখ্য। আমরা এই তরুণদের নিয়েই একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই।
এই উৎসবে ২০টি স্টলে দেশের ঐতিহ্যবাহী ৫০ প্রকারেরও বেশি পিঠার প্রদর্শনী ও বিক্রির আয়োজন করা হয়। নকশি পিঠা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠাসহ নানা স্বাদের পিঠার ঘ্রাণে মুখরিত ছিল পুরো কলেজ ক্যাম্পাস।
উক্ত ২০টি স্টলে পিঠা প্রদর্শনী ও বিক্রির প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে কলজের সকল বিভাগসহ, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের একটি স্টল, বাঙলা কলেজ সাংবাদিক সমিতি (বাকসাস), বিএনসিসি, সেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন বাঁধন, রেডক্রিসেন্ট, গার্লস গাইড, লিও ক্লাব, বাঙলা কলেজ ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি সোসাইটি এবং রোভার স্কাউটস।
এসব স্টলে বিভিন্ন ধরনের পিঠা প্রদর্শিত হয়, যার মধ্যে ভাপা, চিতই, দুধপিঠা, পাটিসাপটা এবং নারকেল পুলির মতো ঐতিহ্যবাহী পিঠাগুলো উল্লেখযোগ্য। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই এসব স্টল সাজিয়ে পরিবেশন করেন।পিঠার স্বাদ। শুধু পিঠার প্রদর্শনী নয়, উৎসবকে আরও রঙিন করে তোলে এক জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নাচ, গান, আবৃত্তি ও নাটক পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীরা।
কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকরাও এই উৎসবে অংশ নেন।
উপস্থিত অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও উৎসবের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ ধরনের উদ্যোগ আগামী প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্যকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত দেন তারা।
আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, “তরুণদের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া পিঠা সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ করতেই এই উৎসব। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজনের ধারা অব্যাহত থাকবে।”