পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থী জনতার আত্মত্যাগে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকলকে সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠতে হবে।
তিনি বলেন, সকল সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে এবং নিরপেক্ষভাবে সুন্দর বাংলাদেশ গঠন করতে হবে। তবেই এই আন্দোলনের সার্থকতা আসবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে গণতন্ত্র, অধিকার, এবং সমতার চর্চা অবাধ হবে। এই আত্মত্যাগের মূল্যায়নে আমাদের জাতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এখানে কোনো সংগঠন, ব্যক্তি, দলীয় বিবেচনা প্রাধান্য পেতে পারে না।”
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আজ রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে জুলাই-জাগরণ: প্রথম আলো আয়োজিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “এই আন্দোলন প্রমাণ করে, সহিংস স্বৈরাচারের পতন অবশ্যম্ভাবী এবং সেই পতন সব সময় লজ্জাজনক হয়। আমি মনে করি, জুলাই-আগস্টে যে অভ্যুত্থান ঘটেছে, তা আমাদের ছাত্রসমাজের অসীম সাহসিকতার উদাহরণ। শিক্ষার্থী জনতা যে কাজ শুরু করেছিল, আমরা শুধু তাদের পাশে থেকে সাহস দিয়েছি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের পাশে ছিলাম এবং থাকব।”
তিনি বলেন, যখন নিহত ও আহতদের তালিকা দেখি, শুনি অনেক শিক্ষার্থী আর কখনো চোখে দেখতে পারবেন না, এই অনুভূতিগুলো হৃদয় বিদারক। যেসব শিক্ষার্থী একসময় ক্রিকেটার বা ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখত, তারা আজ চোখের আলো হারিয়েছে। আমরা শত চেষ্টা করেও তাদের চোখে আলো ফেরাতে পারব না।
রিজওয়ানা বলেন, আমাদের প্রত্যয় হোক গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, নিরাপদ একটি বাংলাদেশ গড়া, যেখানে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পাবে। যেসব সন্তানেরা জীবন দিয়ে এই পথ তৈরি করেছে, তাদের প্রতি এটি হবে প্রকৃত শ্রদ্ধা।
তিনি বলেন, এই আয়োজন আমাদের আন্দোলনের সাক্ষ্য প্রমাণ ধরে রাখবে এবং নিশ্চিত করবে যেন এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বা চলাকালীন ঘটনাগুলো কেউ বিকৃত করতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, এই আয়োজন আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ার সংগ্রাম যেন আত্মত্যাগের মহিমায় পরিচালিত হয়।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, শিক্ষার্থী সমাজের প্রতি অতীতে অনেক অন্যায় করা হয়েছে। তাদের স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এখন সুযোগ এসেছে, ছাত্র জনতার আকাঙ্খা অনুযায়ী বাংলাদেশ গড়ার। সকলে মিলেই এ বাংলাদেশ গড়তে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটেনের হাইকমিশনার সারাহ কুক এবং প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ।
পরে অতিথিদের নিয়ে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। প্রদর্শনী চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রদর্শনী প্রতিদিন দুপুর ১২টা হতে রাত আটটা পর্যন্ত এবং শুক্রবার বেলা ৩টা হতে রাত আটটা পর্যন্ত চলবে।