কিশোরগঞ্জ–৩ (করিমগঞ্জ–তাড়াইল) আসনটি দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক উত্তাপের জন্য পরিচিত। ক্ষমতাসীন দলের দীর্ঘ সময়ের আধিপত্য, বিএনপির সাংগঠনিক টানাপোড়েন, জাতীয় পার্টির দাপট—সব মিলিয়ে এ আসনের প্রতিটি নির্বাচনে তৈরি হয়েছে নতুন সমীকরণ। সময়ের সঙ্গে পুরনো শক্তিগুলো দুর্বল হয়েছে, কিছু নতুন মুখ উঠে এসেছে, আবার কেউ কেউ নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। এই বৈচিত্র্যময় বাস্তবতায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আলোচনায় উঠে এসেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী প্রভাষক হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদার।
পরিবর্তনশীল রাজনীতির কেন্দ্রে আলমগীর হোসাইন তালুকদার: এই আসনে একসময় শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছিল জাতীয় পার্টি; সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু ছিলেন শক্ত প্রার্থী কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনৈতিক চাপ, সমালোচনা ও গ্রহণযোগ্যতার সংকটে তাঁর অবস্থান দুর্বল হয়েছে—এমনটাই মনে করেন স্থানীয়রা।
বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. এম উসমান ফারুক দলীয় কোন্দল ও বিভাজনের কারণে নিজ দলেই চ্যালেঞ্জের মুখে। জামায়াতের প্রার্থী প্রফেসর কর্নেল (অব.) ডা. জেহাদ খান মাঠে থাকলেও ভোটারদের এক অংশ তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দ্বিধায়। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির তরুণ প্রার্থী ইকরাম হোসাইন নতুন হওয়ায় তেমন আলোচনায় নেই।
এসবের মাঝেই ভোটারদের কথোপকথনে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত নাম—আলমগীর হোসাইন তালুকদার।
পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি ও শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে: একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এলাকায় ইতোমধ্যে পরিচিত মুখ হয়েছেন আলমগীর হোসাইন তালুকদার। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও এলাকায় তাঁর নিয়মিত উপস্থিতি—মসজিদ, মাদরাসা, সামাজিক অনুষ্ঠান, দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো—তাঁকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
ধর্মীয় শিক্ষায় উচ্চতর ডিগ্রি, পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষায়ও সর্বোচ্চ যোগ্যতা—দুইয়ের সমন্বয়ে তাঁকে “পরিচ্ছন্ন, মার্জিত, শিক্ষিত নেতৃত্ব” হিসেবে দেখছেন অনেকেই। সংগঠন পরিচালনায়ও তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে—ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য, জেলা শাখার সাবেক সহ-সভাপতি, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেলসহ বিভিন্ন নেতৃত্বের পদে কাজ করেছেন তিনি।
স্থানীয়দের ভাষায়— “দল–মত যাই হোক, মানুষের সুখ-দুঃখে তাঁর উপস্থিতি থাকে। কোনো বড় বিতর্ক নেই, কাজ করেন চুপচাপ—এটাই তাঁকে আলাদা করেছে।”
হাতপাখা প্রতীকের দৃশ্যমানতা বাড়ছে: গ্রামের বাজারে, চায়ের দোকানে, ছাত্র-যুব সমাজের আড্ডায়—সব জায়গাতেই হাতপাখা প্রতীকের আলোচনা দেখা যাচ্ছে। ধর্মীয় ও সামাজিক পরিচ্ছন্নতার বার্তা, সহজ-সরল প্রতীক এবং প্রার্থীর নিজস্ব ভাবমূর্তি হাতপাখার জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে তুলছে।
বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ভোটাররা তাঁর যোগাযোগ দক্ষতা, নম্র স্বভাব ও পরিষ্কার রাজনৈতিক অবস্থানকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। নারীদের মধ্যেও আলমগীর হোসাইন তালুকদারের সৌম্য ব্যক্তিত্ব ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
স্থানীয় বিশ্লেষকদের মতে— “শিক্ষা, মূল্যবোধ, পরিচ্ছন্ন ইমেজ ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা হাতপাখার সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করেছে।”
জটিল সমীকরণে নতুন সম্ভাবনার উত্থান: আগের নির্বাচনের মতো এবারের সমীকরণও জটিল। পুরনো শক্তি দুর্বল, দলগুলোতে অসন্তোষ, ভোটাররা পরিবর্তনের খোঁজে—এই প্রেক্ষাপটে স্বচ্ছ রাজনৈতিক আদর্শ, সহজগম্যতা ও শিক্ষিত নেতৃত্ব আলমগীর হোসাইন তালুকদারকে অন্যদের চেয়ে আলাদা স্থানে নিয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অভিমত—“এই আসনে জনপ্রিয়তার দৌড়ে এখন হাতপাখাই এগিয়ে আছে।”
শেষ কথা:
কিশোরগঞ্জ–৩ আসনের রাজনৈতিক উত্তাপ যতই বাড়ছে, ততই বাড়ছে হাতপাখা প্রতীকের বাতাস। নতুন প্রজন্মের আগ্রহ, সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির সম্ভাবনা—সব মিলিয়ে এই আসনে প্রতিযোগিতা যতটা কঠিন, সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু বলা যায়—আলমগীর হোসাইন তালুকদারকেই।