ধান কাটতে বাঁধা দেওয়ায় বরগুনার আমতলীতে চার নারীসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে প্রতিপক্ষ। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, হলদিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফ গাজীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এই হামলা চালায়। গুরুতর আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসকরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। আহতদের মধ্যে কদভানু (৪৫) ও নুর নাহার (৩৫)-এর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের মন্নাফ হাওলাদার ও জামাল গাজীর মধ্যে প্রায় ১৫ একর জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত ১১ নভেম্বর ওই জমির ঘাস কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরে উভয় পক্ষ আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে জামাল গাজীর দায়ের করা এক মামলায় মন্নাফ হাওলাদার ও তার ১১ জন স্বজন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
ওই সুযোগে শুক্রবার বিকেলে আরিফ গাজীর নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল জমির ধান কাটতে গেলে মন্নাফ হাওলাদারের বাড়ির নারীরা বাঁধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা কদভানু, শেফালী (৪০), নুর নাহার, মমতাজ (৭০) ও সাদ্দাম হোসেনকে (৩০) ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
ভুক্তভোগীরা ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। শহীদুল ইসলামের অভিযোগ, পরে হামলাকারীরা আহত কদভানুর ঘরে আগুন দেয় এবং হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা দিতে বাধা দেয়। এমনকি তাকে (শহীদুল) মারধরও করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ শুক্রবার রাতে তিনজনকে আটক করেছে। আটকরা হলেন, জাকারিয়া, সগির ও লিপি বেগম।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, গুরুতর আহত পাঁচজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুইজনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।
হলদিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফ গাজী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।