সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
জনশক্তি রপ্তানি: মালয়েশিয়া ‘চক্রের হোতা’ স্বপনের ৫০০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ কিন্ডারগার্টেনের জন্য সরকারি নীতিমালার আশ্বাস আমিনুল হকের সাংবাদিকদের সঙ্গে নবাগত এসপির মতবিনিময়: নির্বাচন নিরাপত্তায় প্রস্তুত পটুয়াখালী পুলিশ আমতলীতে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নির্বাচনে সভাপতি দেলোয়ার, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা তাড়াইলের ওসি সাব্বির রহমান সততার নিদর্শন মির্জাগঞ্জে অক্সফোর্ড কে, জি স্কুলে নানান আয়োজনে ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জ-১ এ হেদায়াতুল্লাহ হাদীর উত্থান: রিকশা মার্কায় ভোটারের আস্থা আমতলীতে ধান কাটতে বাঁধা দেওয়ায় চার নারীসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম নান্দাইলে বিএনপি ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী ইয়াসের খান চৌধুরীর নান্দাইল প্রেসক্লাব সাংবাদিকদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় জার্মানি থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে শনিবার

বদরুলের‘ বদকর্মে’ ডুবছে গণপূর্ত অধিদপ্তর

অনলাইন ডেস্ক:
  • আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৫৭৬৭ বার পঠিত

পাঁচজনকে ডিঙ্গিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী পদে চলতি দায়িত্ব পেয়েছিলেন খালেকুজ্জামান চৌধুরী। সবার আশা ছিল অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করা খালেকুজ্জামানের হাত ধরেই নিজেদের হারানো গৌরব উদ্ধার করতে পারবে গণপূর্ত অধিদপ্তর। কিন্তু তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী সাভার গণপূর্ত সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ বদরুল আলম খানের নানা ‘বদ কর্মকান্ডে’ ডুবতে বসেছেন তিনিসহ গণপূর্ত অধিদপ্তর। বদরুলের এই কর্মে প্রশয় রয়েছে বর্তমান সচিব মো. নজরুল ইসলামেরও।

বৃহত্তর গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে সেই সরকারের ঘনিষ্ঠভাজন হিসেবে গণপূর্ত অধিদপ্তরে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিলেন মোহাম্মদ বদরুল আলম খান। তৎকালীন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর বাড়ির লোক হিসেবে পরিচিতি ছিল তার। একই এলাকায় বাড়ি হওয়ায় সে সময়ে নিয়োগ, বদলি নিয়ে প্রভাব বিস্তার করতো। এর আগে ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলী থাকার সুবাদে সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা ছিল। এখনও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে ভোলার ঠিকাদারদে সঙ্গে। তাদের নিয়েই একটি সিন্ডিকেট করে ব্যাবসা করার অভিযোগ রয়েছে বদরুলের বিরুদ্ধে।

গত ২৮ অক্টোবর গণপূর্ত অধিদপ্তরের চলতি দায়িত্বের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মাদ শামীম আখতারকে সরিয়ে প্রধান প্রকৌশলীর রুটিন দায়িত্ব দেয়া হয় গণপূর্ত মেট্টো জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরীকে। এর একদিন পরে একই পদে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। পাঁচজনকে ডিঙ্গিয়ে (সুপারসিড) প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব দেয়ায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও বিতর্কের সৃষ্টি হলেও দায়িত্ব নিয়ে খালেকুজ্জামান চৌধুরীর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারনে সবার মধ্যে আস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। সেই আস্থায় গুড়েবালি করে দিচ্ছে বদরুলের একের পর এক বদ কর্মকান্ড। নিয়োগ বদলির ক্ষেত্রে বদরুলের একক নিয়ন্ত্রণ ঠেকাতে পারছেন না খালেকুজ্জামান নিজেই। সচিবের আস্কারা পেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন বদরুল আলম। ফলে বদরুলের কাছে একেবারে অসহায় অবস্থায় পড়েছেন চলতি দায়িত্বে প্রধান প্রকৌশলী খালেকুজ্জামান চৌধুরী।

গত বছরের পাঁচ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর একেবারেই খোলস বদলে ফেলেন মোহাম্মদ বদরুল আলম খান। নিজেকে বিএনপি জামাতের ঘনিষ্ঠ হিসেবে প্রমাণ করতে একের পর এক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মো. নজরুল ইসলাম সচিব হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ‘বৃহত্তর কুমিল্লা’র লোক হিসেবে সচিবের কাছাকাছি পৌঁছে যান। সচিবের সঙ্গে সম্পর্কের সূত্র ধরেই গণপূর্তের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন বদরুল। পাঁচজনকে ডিঙ্গিয়ে প্রধান প্রকৌশলী পদে খালেকুজ্জামান চৌধুরী দায়িত্বে আসার পর থেকে তাকেও নিজ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন বদরুল। তার পরিকল্পনাতেই সকল বদলি ও পদোন্নতির কাজ অনেকটা পুতুলের মতোই করে যাচ্ছেন খালেকুজ্জামান। এ নিয়ে গণপূর্তের সকল স্তরের প্রকৌশলী ও কর্মকর্তার মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ।

মোহাম্মদ বদরুল আলম খান গত বছরের পাঁচ আগস্ট থেকে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে গণপূর্তে ঠিকাদারি কাজ করে আসছেন। গণপূর্তের প্রকৌশলীদের মধ্যে ঠিকাদারী করার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এই বদরুল। তিনি ভোলা, চট্টগ্রাম, ব্রাম্মনবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকার ঠিকাদারদের একটি শক্তিশালী গ্রুপ তৈরি করেছেন। যাতে ঢাকার স্থানীয় বিএনপি-জামাতের নেতারাও রয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন ডিভিশন ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লার প্রকৌশলীদের চাপ দিয়ে এই সিন্ডিকেটকে কাজ দিতে চাপ সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি কুমিল্লার ইএম-এর একটি টেন্ডারে ভুয়া সার্টিফিকেটধারী এক ঠিকাদারকে কাজ দিতে কুমিল্লার প্রকৌশলী এবং ঢাকার এমআইএস সেলের প্রকৌশলীকে চাপ সৃষ্টি করেছে। পরে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া মিরপুরে আসিফ নামে এক বিএনপি নামধারী ঠিকাদারকে কাজ দিতে বিভিন্ন ডিভিশনে ফোন করে প্রকৌশলীদের বাধ্য করছেন বদরুল। এই আসিফ ইতিমধ্যেই পুলিশের বিভিন্ন থানার ভবন ও অন্যান্য সরকারি প্রকল্পে কাজ পেয়েছেন।

ঠিকাদাররা জানান, বদরুল আলম ও আসিফের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। বদরুল আলম ফোনে বিভিন্ন নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন এবং তাদেরকে চাপ দেন আসিফকে কাজ দিতে। মিরপুর পাইকপাড়া আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আরবরিকালচার কাজ নিয়েও অভিযোগ আছে। আরবরিকালচার বিভাগের দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও, বদরুল আলম মিরপুর বিভাগের মাধ্যমে টেন্ডার করান। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। পুলিশের ১০৭ থানা নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় মিরপুর গণপূর্ত বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন ভাষানটেক থানার কাজের টেন্ডারও তাঁর পছন্দের ঠিকাদারকে দিতে বাধ্য করেছেন। এছাড়াও বদরুল আলম ভাইদের দিয়ে ডেভেলপার ব্যাবসা করছেন প্রায় ২০ বছর ধরে। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তার পেশাবহির্ভুত কাজগুলো তদন্ত করলেই সব ধরা পড়বে।

এ ব্যাপারে মোহাম্মদ বদরুল আলম খান সাংবাদিককে বলেন, প্রধান প্রকৌশলীর কাছ থেকে আমাকে দূরে সরাতে একটি মহল সক্রিয় রয়েছে। অধিদপ্তরে আমি ভালো কাজ করছি। যা অনেকেই মেনে নিতে পারছে না। সাভার সার্কেলের বাইরে তাঁর ভালো কাজ করার এখতিয়ার আছে কি-না সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিপার্টমেন্টের স্বার্থে অনেক কিছুই করতে হয়। সিন্ডিকেট করে ঠিকাদারী কাজ করা এবং বিভিন্ন প্রকৌশলীকে ফোন দিয়ে কাজ দিতে বাধ্য করার বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো ঠিক নয়। অপপ্রচার।

সূত্র: SS

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..