উর্বর পলিমাটিতে জন্ম নেয়া মহান পেশা শিক্ষকতাকে জীবনের চাকুরী নয় ব্রতী হিসাবে মেনে নিয়ে সোনালী সময় ব্যয়ের মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করে। যেখানে নেই কোন অবৈধ অর্থের সমাহার , নেই কোনো বিলাসী চাকচিক্যময় জীবনের উপভোগ । সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পরপরই সভ্য ও আদর্শ মানুষ গড়ার দায়িত্ব কাঁধে আসে সন্মানিত শিক্ষক সম্প্রদায়ের। একজন দুস্তর মানুষ হিসাবে গড়ার পুরো কাজটি করে থাকেন এই কারিগরেরা । নি:সন্দেহে এর চেয়ে মহান ও নির্লোভ পেশা আর কোনোটি হতে পারে না। যা সর্বজন স্বীকৃত। কিন্তু এই জাতি গড়ার অমিয় সেবকদের জীবন যাপনে রয়েছে নানা অসংগতি ও সীমাবদ্ধতা। ট্রাক কিংবা বাসের টুল বক্সের নিচে লিখা থাকে ” জন্ম থেকে জ্বলছি “।
আজ জাতি স্বাধীনতার চুয়ান্ন বছর অতিবাহিত করলেও সেই জন্ম থেকে জ্বলছি বাক্যটি অক্টপাসের মতো লেগে আছে এই জাতির কপালে। অভাব আর দৈন্যতার যাতাকলে পিষ্ট হয়ে এমপিও ভুক্তি শিক্ষক সমাজ পরিবার আর রাষ্ট্রের নিকট তুচ্ছার্থে ব্যবহার হচ্ছে যা সত্যিই ন্যাক্কারজনক ও অবমাননাকর। মান্যবর উপদেষ্টা, আপনি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে যথাস্থানে পৌছিয়ে দিতেই আবাবিলের মতো আগমন হয়েছে। যে কর্ম ও চিন্তার মাধ্যমে আপনার শাসনামল জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে এবং বরণীয় হয়ে থাকবেন। কিন্তু আজ নিশ্চয় শিক্ষক সম্প্রদায়ের নিদারুণ করুণ অবস্থা দেশে বিদেশে লক্ষনীয় এবং আলোচিত সমালোচিত। আপনি একজন শিক্ষক ও সজ্জন মানুষ। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত আপনার মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটবে এবং ঘটুক এটাই প্রিয় স্বদেশের চাওয়া ও পাওয়া এবং অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
শিক্ষক সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন থাকতে পারে কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই স্বজনদের আসন সর্বাগ্রে। কিন্তু এই জন্মভিটায় অনেকাংশে অবহেলিত নিগৃহীত। আপনার মাধ্যমে এই জাতির কারিগর সমাজ এর স্থায়ী সমাধান চান, আন্দোলন সংগ্রাম আর অনশন কোনো সমাধানের পথ হতে পারে না, আপনার প্রিয় স্বদেশে, আপনার জীবদ্দশায় কোনো শিক্ষক লাঞ্জনা গঞ্জনার শিকার হউক তা কারো কাম্য নয়, আপনার অমিয় ভালবাসার মাধ্যমে দ্রুত শিক্ষক সম্প্রদায় ফায়সালার সহজ পথে শ্রেণি কক্ষে ফিরে যাবে তেমনটা দেশবাসীর প্রত্যাশা। আর কতো অনাহার অর্ধাহার, রোদে ও মেঘে ভিজে দিনাতিপাত করবে তা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাস্কর। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে শিক্ষক সম্প্রদায়ের জীবন মান নিশ্চয়ই সকলে ওয়াকিবহাল। তা হতে সকলের প্রেরণার হতে পারে একটা সুষ্ঠু সমাধানের প্রেক্ষাপট। আবারও মান্যবর প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষক হিসাবে দ্রুত নি:সংকোচে চিরদিনের একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন হউক এটাই সময়ের শ্রেষ্ঠ দাবি।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক ( ইংরেজি )
তারঘাট আনছারীয়া ফাজিল ( ডিগ্রী) মাদরাসা ।