সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা দিন দিন ভিসা জটিলতায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। নতুন করে লেবার ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকায় ও লো-প্রফেশন ভিসা ট্রান্সফার স্থগিত থাকায় অনেক শ্রমিক তাদের ভিসা নবায়ন বা চাকরি পরিবর্তন করতে পারছেন না। ফলে হাজার হাজার শ্রমিক এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।
সরকারি হিসেবে বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছেন। তারা নির্মাণশিল্প, পরিবহন, রেস্টুরেন্ট, সেলস, ড্রাইভিং এবং গৃহকর্মীসহ বিভিন্ন খাতে যুক্ত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী শ্রমিকরা প্রতিবছর বাংলাদেশে কয়েক বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠান, যার বড় একটি অংশ আসে আমিরাত থেকে। এ অর্থ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি পরিবারগুলোর জীবনযাত্রা নির্বাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় দুবাইতে কর্মরত শ্রমিক সাইফুল ইসলামের তিনি জানান, “আমার ভিসা রিনিউ করার সময় হয়ে গেছে। কিন্তু ট্রান্সফার বন্ধ থাকায় কোম্পানি পরিবর্তন করতে পারছি না। ভিসা নবায়ন না হলে দেশে ফেরত যেতে হবে, অথচ পরিবারের ঋণ শোধ করার মতো অবস্থাও নেই।”
শারজাহতে থাকা আরেক শ্রমিক আবদুল কাদের বলেন, “নতুন ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হচ্ছে তারা সবাই চিন্তায় আছে। এখন দেশে টাকা পাঠানোও কঠিন হয়ে পড়েছে।”
এ বিষয়ে দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের একজন কর্মকর্তা বলেন, “ভিসা ট্রান্সফার বিশেষ করে ‘লো-প্রফেশন’ ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। এতে অনেক শ্রমিক সমস্যায় পড়ছেন। আমরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি, যেন দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করা যায়।”
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা জরুরি। একইসঙ্গে শ্রম বাজারে দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হলে এ ধরনের সমস্যার সমাধান সহজ হতে পারে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা ঘাম ঝরানো পরিশ্রমে নিজেদের ভাগ্য গড়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। কিন্তু ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা তাদের জীবনযাত্রাকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। দুই দেশের যৌথ উদ্যোগ ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।